ক্রিকেট

আম্পায়ার্স কল বাতিলের পরামর্শ এমসিসির


করোনাকালীন ক্রিকেটের বিভিন্ন নিয়মের পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসেছিল মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি (ডব্লিউসিসি)। ভার্চুয়াল এই সভায় বাউন্সার, ডিআরএস. টেস্ট বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ, বলে লালার ব্যবহার, টেস্টে স্বাগতিক দেশের আম্পায়ার ও নারী ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সম্প্রতি এলবিডব্লিউ এর ক্ষেত্রে আম্পায়ারদের বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কারণে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। বিশেষ করে আম্পায়ার্স কল। এলবিডব্লিউর ক্ষেত্রে ডিআরএস পদ্ধতিতে আম্পায়ার্স কল নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। এদিন সভাতে এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এমসিসি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ডিআরএসে এলবিডব্লুর ক্ষেত্রে আম্পায়ার্স কল ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেছে। বিশেষ করে একই বলে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যখন আউট বা নট আউট দুটিই হতে পারে, এটা দেখে সমর্থকরা বিভ্রান্ত হচ্ছে। তাঁদের ধারণা, মাঠের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব না দিয়ে সরাসরি আউট বা নট আউট দিয়ে দিলেই সবার জন্য ভালো। কোনো আম্পায়ার্স কল নয়।’

অনেক সদস্যে আম্পায়ার্স কলের পক্ষে বিপক্ষে মত দিয়েছেন। যেখানে কেউ চাচ্ছেন আরও একটু পরিবর্তন করতে আর কিছু সদস্য চাচ্ছেন বর্তমান নিয়মই থাক। তাঁদের ধারণা, সমর্থকরা বুঝতে ভুল করছে। তবে কমিটি চাচ্ছে আম্পায়ার্স কল বাতিল হবে, আর নট আউট বা আউটে নিজের পক্ষে সিদ্ধান্ত না পেলে রিভিউও নষ্ট হোক। আইসিসির কাছে এই মতামত পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে।এ ছাড়া ৩০ গজের বাইরে ও ভেতরে আম্পায়ার্স কলের কার্যকারিতা নিয়েও কথা বলেছেন তারা। কমিটিরে সদস্যরা মনে করছেন ৩০ গজের ভেতরে আম্পায়ার্স কলগুলো দারুণভাবে কাজ করছে। তবে সীমানার কাছের কোনো সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। যে কারণে আউট বা নট আউট না দিয়ে দেখিনি বলে টিভি আম্পায়ারকে বার্তা দিতে বলেছেন তাঁরা।

কদিন আগে শেষ হওয়া অস্ট্রেলিয়া-ভারত সিরিজে ক্রিকেটারদের ইনজুরিতে পড়ার হিড়িক চেপেছিল। যেখানে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছিল লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের অতিরিক্ত বাউন্স দিয়ে বিপাকে ফেলা নিয়ে। এ নিয়মের পরিবর্তনও চেয়েছিলেন অনেকে।বিষয়টি আমলে নিয়েছে এমসিসির ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি। আধুনিক ক্রিকেটের জন্য শর্ট পিচড ডেলিভারি সংক্রান্ত আইন উপযুক্ত কি না সে বিষয়ে বিশ্বজুড়ে মতামত নেবে তাঁরা। পরামর্শ বিবেচনা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হলো ব্যাট এবং বলের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা৷

সেই সিরিজ চলাকালীন টি-টোয়েন্টিতে রবীন্দ্র জাদেজার ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে যুবেন্দ্র চাহালকে নামিয়েছিল ভারত। সেদিন অস্ট্রেলিয়ার গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল চাহাল। তাঁর দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয় পেয়েছিল ভারত। যে কারণে সেই কনকাশন সাব নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছিল। অন্য আঘাতের ক্ষেত্রে কনকাশনকে স্বীকৃতি দেওয়া যায় কি না এ নিয়েও আলোচনা হয়েছে এমসিসির সভায়।করোনাকালে ক্রিকেট ফিরলেও বেশ কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। যার মাঝে অন্যতম ছিল বলে লালা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা। করোনার এই সময়টায় বলে ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটি বলবৎ থাকবে বলে জানা গেছে। তবে এই মহামারি শেষ হলে আগের সিদ্ধান্তে ফিরে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন অনেকে।

এদিন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়েও আলোচনা করেছে কমিটির সদস্যরা। বর্তমানে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কার্যক্রম নিয়ে সন্তুষ্ট তাঁরা। প্রথম ধাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে চলতি বছরের মাঝামাঝিতে। ধারণা করা হচ্ছে ২০২১-২৩ এর মাঝে চালু থাকতে পারে দ্বিতীয় ধাপ। এ ছাড়া সভায় টেস্টে ঘরের মাঠে স্বাগতিক আম্পায়ার ব্যবহার ও নারী ক্রিকেট নিয়েও আলোচনা করেছে।ভার্চুয়াল এই সভায় উপস্থিত ছিলেন , মাইক গ্যাটিং (সভাপতি), জন স্টিফেনসন, স্যার অ্যালিস্টার কুক, সৌরভ গাঙ্গুলি, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, কুমার সাঙ্গাকারা, শেন ওয়ার্ন ও রিকি পন্টিংয়ের মতো সাবেক ক্রিকেটাররা। চলতি বছরের আগস্টে লর্ডসে অনুষ্ঠিত হবে পরবর্তী সভা।