ক্রিকেট

শেষ দিনে ভারতের ভাগ্য নির্ভর করছে বুমরা, শার্দূল, সিরাজদের হাতেই


চতুর্থ দিনের খেলা শুরুর আগে ভারতীয় সমর্থকদের মনে একটাই প্রশ্ন ছিল, ঠিক কত রানের লিড নিতে পারবে ভারত? ওভালের পিচে জেতার জন্য ইংল্যান্ডকে কত রানের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া জরুরি, তা নিয়ে মতভেদ ছিল ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও। কেউ বলছিলেন ৩০০ ঠিক আছে, কেউ আর একটু বাড়িয়ে ৩৫০ রানের কথা বলছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত লিড নিল ৩৬৭ রানের। তবে দিনের শেষে ব্যবধান কমে হয়েছে ২৯১ রান। ইংল্যান্ড বিনা উইকেটে ৭৭ তুলেছে।

ভারতীয় ইনিংসে তৃতীয় দিনে ভিত গড়ে দিয়েছিলেন রোহিত শর্মা এবং চেতেশ্বর পুজারা। রবিবার চ্যালেঞ্জটা ছিল বিরাট কোহলীর কাছে। বড় রান করা তো বটেই, ভারতের রানকে ভদ্রস্থ রানে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও ছিল তাঁর। কিন্তু ওভালেও কোহলী ব্যর্থ। ইংল্যান্ডের মাটিতে হাজার রান করে সচিন তেন্ডুলকর এবং রাহুল দ্রাবিড়কে ছুঁলেও, শতরান তো দূর, অর্ধশতরানও এল না তাঁর ব্যাট থেকে। ২০১৪-র পর ইংল্যান্ডে ফের ছন্দের অভাব কোহলীর ব্যাটে।

দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের ৪৬৭ রানে পৌঁছনোর পিছনে মূল কাণ্ডারি ‘ব্যাটসম্যান’ শার্দূল ঠাকুর। ব্যাট হাতে দলকে ইতিমধ্যেই ভরসা দিয়েছেন তিনি। প্রথমে অস্ট্রেলিয়ায়। এ বার ইংল্যান্ডে। ওভালের প্রথম ইনিংসে তাঁর ব্যাটের জোরেই প্রায় দুশোর কাছাকাছি পৌঁছেছিল ভারতের রান। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনিই ভারতের রানকে ৪৫০ পার করে দিলেন। দুই ইনিংসে মিলিয়ে তাঁর রান ১১৭। বোলার হিসেবে দলে নেওয়া হয়েছে তাঁকে। কিন্তু আসল তফাৎ গড়ে দিলেন ব্যাটেই। তাঁর এই রান ভারতের স্কোরবোর্ডে না থাকলে ইংল্যান্ডের হেসেখেলে জিতে যাওয়ার কথা।

পাঁচ নম্বরে জাডেজাকে নামানোর আরও এক বার ব্যর্থ। ১৭ রান করে ফিরলেন ক্রিস ওক‌সের বলে। তবে চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে অজিঙ্ক রহাণেকে নিয়ে। ইংল্যান্ড সফর এর আগে অনেকের ক্রিকেটজীবনে ইতি টেনে দিয়েছে। রহাণে কি এ বার সেই দলে পড়লেন? ওভালের ব্যাটিং সহায়ক পিচেও তাঁর ব্যাটে রান নেই। প্রথম ইনিংসে ১৪ করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে খাতাই খুলতে পারলেন না। লর্ডসের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬১ বাদে তাঁর ব্যাটে কোনও রান নেই। ইংল্যান্ডে পাঁচ ইনিংসে তাঁর মোট রান এখনও ১০০ পেরোয়নি। অনেকেই তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।

ভারতের রান ভদ্রস্থ জায়গায় পৌঁছনোর পিছনে শার্দূলের পাশাপাশি অবদান রয়েছে পন্থের। স্কুলছাত্রের মতো খারাপ শট খেলে প্রথম ইনিংসে আউট হয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর থেকে পাওয়া গেল ধৈর্য। সপ্তম উইকেটে শার্দূলের সঙ্গে ১০০ রানের জুটি ভারতকে ম্যাচে তো ফেরালই, লড়াইয়ের জায়গা তৈরি করে দিল। শেষ দিকে যশপ্রীত বুমরা এবং উমেশ যাদবের ঝোড়ো ইনিংসও প্রশংসনীয়।

ব্যাটসম্যানরা তাঁদের কাজ করে দিয়েছেন। এ বার যাবতীয় দায়িত্ব বোলারদের কাঁধেই। ম্যাচের পরিস্থিতি যা, তাতে তিন ধরনের ফলই সম্ভব। একমাত্র পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন, বুমরা, মহম্মদ সিরাজ, শার্দূলরাই।